আর্মেনিয়া-আজারবাইজানের লড়াইয়ে তুরস্কের ইন্ধন

আর্মেনিয়া-আজারবাইজানের লড়াইয়ে তুরস্ক ইন্ধন দিচ্ছে বলে কোনো কোনো মহল মনে করছে। অন্যদিকে রাশিয়ার শান্তি প্রস্তাব খারিজ করেছে দু'টি দেশই।

নাগরনো-কারাবাখের দখল নিয়ে আর্মেনিয়া-আজারবাইজানের যুদ্ধ অব্যাহত। আজ বৃহস্পতিবারেও (১ অক্টোবর) দুই দেশ ক্রমাগত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। নাগরনো-কারাবাখের বহু বাড়ি ভেঙে পড়েছে। মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। এখনো পর্যন্ত শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং এদর মধ্যে বহু সাধারণ মানুষও আছেন। 

এরই মধ্যে গতকাল বুধবার রাশিয়া দুই দেশের মধ্যে শান্তি আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের সরকার তাতে রাজি হয়নি।

এদিকে তুরস্ক কি আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের সাম্প্রতিক যুদ্ধে ইন্ধন দিচ্ছে? যত দিন যাচ্ছে, ততই এই প্রশ্নটি সামনে চলে আসছে। মঙ্গলবার আর্মেনিয়া অভিযোগ করেছিল, তুরস্কের এফ-১৬ যুদ্ধবিমান তাদের বায়ুসেনার বিমান ধ্বংস করেছে। বুধবার ফের তারা দাবি করেছে, তুরস্কের যুদ্ধবিমান দিনভর আর্মেনিয়ার আকাশসীমায় বিপজ্জনকভাবে ঘুরে বেড়িয়েছে। 

তুরস্ক এসব অভিযোগই অস্বীকার করেছে। তবে দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান বলেছেন, আজারবাইজানের উচিত নাগরনো-কারাবাখ দখল করে আর্মেনিয়াকে শিক্ষা দেয়া। তার জন্য তুরস্ক আজারবাইজানকে সাহায্য করতে প্রস্তুত। বিশেষজ্ঞদের অনেকেরই ধারণা, তুরস্ক সরাসরি যুদ্ধে নেমে পড়লে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ চেহারা নেবে। 

অন্যদিকে রাশিয়া বুধবার দুই দেশকে আলোচনার টেবিলে আসার আহ্বান জানায়। রাশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়, যুদ্ধ থামিয়ে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাশিয়ার মধ্যস্থতায় আলোচনায় বসুক। কিন্তু আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া- কোনো দেশই এই প্রস্তাবে কর্ণপাত করেনি। আজারবাইজানের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেয়া হয়েছে, আর্মেনিয়া নাগরনো-কারাবাখ থেকে সরে গেলেই তারা শান্তি প্রক্রিয়ায় অংশ নেবে। তার আগে পর্যন্ত যুদ্ধ প্রক্রিয়া জারি থাকবে। আর্মেনিয়াকে শিক্ষা দেয়া হবে। 

অন্যদিকে আর্মেনিয়াও জানিয়েছে, আজারবাইজান তাদের এলাকা দখল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তাদের উচিত জবাব দেয়া হবে।

দীর্ঘদিন ধরে নাগরনো-কারাবাখ নিয়ে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের দ্বন্দ্ব। তবে ১৯৯৪ সালে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতির চুক্তি হয়। সেই চুক্তি লঙ্ঘন করেই দুই দেশ যুদ্ধ শুরু করে দিয়েছে। নাগরনো-কারাবাখ এখনো মুক্তাঞ্চল। সেখানে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রশাসনও রয়েছে। তাদের বক্তব্য, দুই তরফ থেকেই তাদের এলাকার উপর আক্রমণ হচ্ছে। আজারবাইজান ড্রোন ব্যবহার করে গোলাবর্ষণ করছে বলেও অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হবে বলেই তারা মনে করছে। -ডয়চে ভেলে